বাংলাদেশে করোনা রোগী সনাক্ত

আপডেটঃ বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ২১ জন করোনা রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ জন মারা গিয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশে তিনজন করোনা রোগী শনাক্ত পাওয়া গেছে বলে ঘোষনা দিয়েছে ঢাকার আইইডিসিআর। ৮ই মার্চ সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগেরদিন তিনি জানিয়েছিলেন, যেকোন সময় বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্ত হতে পারে।

শনাক্ত হওয়া ৩জনের মধ্যে মধ্যে দুইজন ইতালি ফেরত। অপরজন আক্রান্ত একজনের পরিবারের সদস্য। আইইডিসিআর পরিচালক জানিয়েছেন আরও তিনজনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এর আগে বিশ্বের শতাধিক দেশে করোনা ভাইরাসের রোগী পাওয়া গেলেও এই প্রথম বাংলাদেশে করোনা রোগী সনাক্তের তথ্য প্রকাশ হলো।

আইইডিসিআর জানিয়েছে, যারা বিদেশ থেকে আসছেন তারা সতর্কতার অংশ হিসেবে নিজেদের বাড়িতে অবস্থান করবেন। যাতে করোনার কোন ধরণের লক্ষণ ধরা পড়লে ব্যবস্থা নেয়া যায়। এতে অন্যরা সংক্রমণ ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবে।

করোনা ভাইরাসে মৃত্যুহার

করোনা ভাইরাসের এই আক্রমন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এর মৃত্যুহারের সঠিক হিসেব করা কঠিন। কারন এখন যে অসুস্থ আছে সে সুস্থ হবে না তার মৃত্যু হবে তা আমরা জানি না।

তবে মৃত্যুহারের একটা কাছাকাছি মান বের করা যায় হিসেব করে। যেমন ধরা যাক, আজ ১৫ই মার্চের হিসেব মতে সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসে তথ্য নিন্মরূপঃ

মোট আক্রান্ত হয়েছে – ১৫৬,৫৬৮
সুস্থ হয়েছে – ৭৫,৯২২
মৃত্যু – ৫,৮৩৬
এখনও অসুস্থ – ৭৪,৮১০
— সাধারন অসুস্থ – ৬৯,১৬০
— মারাত্মক অসুস্থ – ৫,৬৫০

আরও পড়ুন – করোনা ভাইরাস: উৎপত্তি, প্রতিকার ও সতর্কতা

উপরের হিসেব মতে মোট আক্রান্ত ও মোট মৃত্যু থেকে মৃত্যুহার বের হয়- ১০০x৫,৮৩৬/১৫৬,৫৬৮ = ৩.৭৩% ।

কিন্তু এখন পর্যণ্ত মোট আক্রান্তের মধ্যে মারাত্ত্বক অসুস্থ আছে ৫,৬৫০ জন। এখান থেকেও বেশ কিছু রোগী মারা যাওয়ার সম্ভবনা আছে। আবার গত এক সপ্তাহে যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের মধ্যেও অনেকের অবস্থা আগামীতে মারাত্ত্বক হতে পারে। এর বিপরীতে এখন পর্যন্ত এমন অনেক রোগী আছে যারা সামান্য অসুস্থ হয়েছে এবং ভালো হয়ে গিয়েছে। তারা হয়তো হাসপাতালে রিপোর্টও করে নাই। এদের সংখ্যা হিসেবে আসে নাই। তাই একেবারে সঠিক মৃত্যুহার বের করা সব সময়ই কঠিন।

তবে যেটা জানা জরুরী তা হলো যারা বয়স্ত ও যাদের আগে থেকেই বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যা, যেমন- ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনী রোগ, ফুসফুসের সমস্যা ইত্যাদি আছে তাদের বেশী সাবধান হতে হবে। কারন তাদের ক্ষেত্রেই করোনা সমস্যা বেশী জটিল হয়ে থাকে। ইতিমধ্যেই, আমেরিকার সিডিসি থেকে বৃদ্ধ/বৃদ্ধাদের একান্ত জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যেতে অনুরোধ করা হয়েছে।

নিবন্ধিত রোগীদের প্রাপ্ত তথ্যমতে নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে বয়সভেদে মৃত্যুহার নীচে দেওয়া হলো-

বয়স মৃত্যুহার
৮০+ বছর ১৪.৭%
৭০-৭৯ বছর ৮.০%
৬০-৬৯ বছর ৩.৬%
৫০-৫৯ বছর ১.৩%
৪০-৪৯ বছর ০.৪%
৩০-৩৯ বছর ০.২%
২০-২৯ বছর ০.২%
১০-১৯ বছর ০.২%
০-৯ বছর ০.০%

তথ্যসূত্র

দেশে দেশে করোনা ভাইরাসের (COVID-19) আক্রমন

আপডেটঃ ২৫ এপ্রিল ২০২০

এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে বিশ্বের ২০৯টি দেশ/অঞ্চলে করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত প্রায় ২৮ লক্ষ ১৫ হাজার জন রোগী পাওয়া গিয়েছে। রোগীদের মধ্যে মৃত্যু ঘটেছে প্রায় ১ লক্ষ ৯৭ হাজার জনের। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশী হতে পারে। কারন এখানে শুধু মেডিকেল পরীক্ষায় ধরা পড়া রোগীদের সংখ্যাই হিসেব করা হয়।

নীচে শীর্ষ কয়েকটি করোনা ভাইরাস আক্রান্ত দেশের পরিসংখ্যান পরিসংখ্যান দেওয়া হলো।

নং দেশ আক্রান্ত মৃত্যু
ইউ.এস.এ ৮৪৯,০৯২৭৫ ৫১,৬০৭
ইটালী ১৯২,৯৯৪ ২৫,৯৬৯
স্পেন ২১৯,৭৬৪ ২২,৫২৪
ফ্রান্স ১৫৯,৮২৮ ২২,২৪৫
যুক্তরাজ্য ১৪৩,৪৬৪ ১৯,৫০৬
বেলজিয়াম ৪৪,২৯৩ ৬,৬৭৯
জার্মানী ১৫৪,৫৪৫ ৫,৭২৩
ইরান ৮৮,১৯৪ ৫,৫৭৪
চীন ৮২,৮০৪ ৪,৬৩২
১০ নেদারল্যান্ড ৩৬,৫৩৫ ৪,২৮৯
১১ ব্রাজিল ৫২,৯৯৫ ৩,৬৭০
১২ তুরষ্ক ১০৪,৯১২ ২,৬০০
১৩ সূইডেন ১৭,৫৬৭ ২,১৫২
১৪ কানাডা ৪৩,৫৫২ ২,২৯৪
১৫ স্যুইজারল্যান্ড ২৮,৬৭৭ ১,৫৮৯
১৬ মেক্সিকো ১১,৬৩৩ ১,০৬৯

তথ্যসূত্র